৫ আগস্ট বাঙ্গালী জাতির ২য় স্বাধীনতা দিবস

 قوله تعالى : {وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ} الآية:179

إنَّ دِماءَكُم، وأمْوالَكم وأعْراضَكُم حرامٌ عَلَيْكُم كَحُرْمة يومِكُم هَذَا، في شهرِكُمْ هَذَا، في بلَدِكُم هَذَا، . : قَالَ رسُولُ اللَّهِ ﷺ 

প্রিয় সংগ্রামী সাথীও বন্ধুগন।  ছেলের লাশেও গুলি লাগে, বললেন বাবা , আমার ছেলেকে কারা মারল? কার কাছে বিচার দেব? বেটা তো আর ফিরে আসবে না,এখন ওর বউ ছোওয়ালপালের দিখবি কিডা?, আমার ছেলের কী অপরাধ ছিল? আমাকে কেন সন্তান হারা হতে হল?

প্রিয় সংগ্রামী বন্ধুগন হয়তো হতবম্ভ আর অবাক হচ্ছেন, ভাবছেন এগুলো কী ও কেন বলছে? এগুলো কিসের শিরনাম? তবে হ্যাঁ শুনে রাখেন। এগুলো বাংঙ্গালী জাতির ২য় স্বাধীনতার আত্নোৎসর্গ ও  আত্ন্ত্যাগের জননিদের আর্তনাদ, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি লাল সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন মানচিত্র,তাদের প্রিয়জনদের হাহাকার,এগুলো কয়েকদিন পূর্বের কতগুলো পত্রিকার শিরনাম, আবু সাঈদ আর মুগ্ধের পরিবারের আত্নচিৎকার।

তাই, প্রথমেই আমি স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছি, এবং তাদের বিদেহী আত্নার মাগফিরাত ও পরকালীন সার্বিক কল্যাণের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগন। ৫ আগস্ট বাঙ্গালী জাতির ২য় স্বাধীনতা দিবস । এ স্বাধীনতার শুরু হয়েছিল, গত জুন মাস থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, কোটাপ্রথা বৈষম্যে পরিপূর্ণ ছিল, একশ জন মানুষের সরকারি চাকরি হলে সে পদ গুলোর ত্রিশটিই পাবে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা। এছাড়া জেলা কোটা,নারী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা মিলিয়ে রয়েছে আরও ২৬ শতাংশ। ‍অর্থাৎ একশ জনের ৫৬ জনই মনোনিত হবে বিশেষ গোষ্ঠী থেকে। আর পুরো দেশের সাধারণ মেধাবী ছাত্র সমাজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে মাত্র ৪৪টি আসনে।

 শুরুতে এ আন্দোলন তেমন তীব্রতর ও সহিংস ছিলনা, কিন্তু যখন সরকারী দল সমর্থিত কিছু লোক আন্দোলনকারীদের উপর আক্রমন ও ‍নির্যাতন শুরু করে দিয়েছিল, তখনি আন্দোলনকারীদের দৃঢ়তার মুখে তারা পালাতে বাধ্য হয়,পরে যখন স্বৈরাচার শাসক আন্দোলনকারীদের প্রতি ইঙ্গিত করে রাজাকার সম্বোধন করে, তখন তারা এটাকে কেন্দ্র করে পুনরায় বিক্ষুব্ধ হয়ে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে , রাতেই রাজপথে বের হয়ে পড়ে, এবং তালে তালে  শ্লোগান তুলে, আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার,চেয়েছিলাম অধিকার হয়ে গেলাম বাজাকার।

প্রিয় সংগ্রামী বন্ধুগন একথা সত্য যে কোটাপ্রথা বিরোধী আন্দোলন ছাত্ররা শুরু করলেও পরবর্তীতে ছাত্রদের অভিভাবকগণ এবং অনেক সাধারণ মানুষও এতে যোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তখনি ক্ষমতা লোভি স্বৈারাচার শাসক রক্ত পিপাসু ক্ষুনি হাসিনা তার আসল চেহারা দিখিয়েছে, ২৫ও ২৬ জুলাই  আন্দোলন দমানের জন্য সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে,সর্বপ্রকার ইন্টারনেট বন্ধ করে বাংলাদেশকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন করে, অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্যাতনের স্টিমরোলার চালু করেছে, টিয়ারশেল,পিস্তল,বন্ধুক,কামান, হেলিক্প্টার দিয়ে ঢাকার অলিগুলিকে গণহত্যার রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে, শত শত টগবগে ‍যুবক ছাত্রজনতাকে লাশে পরিণত করেছে, রাস্তার পাশে সংসদ ভবনে গণকবর দিয়েছে, পাখির মতো হাজার হাজার ছাত্রজনতাকে গুলি করেছে, অনেককে পঙ্গু করেছে, সংখ্যা গরিষ্ঠলোককে অন্ধ করেছে ।

 প্রিয় সংগ্রামী বন্ধুগন আসলে সে স্বৈরাচার নিজেকে প্রভুর মতো দেখতো, নিজেকে সাদ্দাদ,হামান,কামান, ফেরআউনের মতো শক্তিশালি মনে করে ছিলো, সে নিজেকে ফেরআউনের মতো  أَنَا۠ رَبُّكُمُ ٱلْأَعْلَىٰ   আনা বলতে চাচ্ছিলো, কিন্তু সে জানেনা আল্লাহ তা’আলা ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেননা ফেরআউন একথা বলার কারণে  আল্লাহ তা’আলা তাকে দৃষ্টান্তহীন  শাস্তি দিয়েছিলন,  মুখে কাদা মাটি দিয়ে পানিতে চুবিয়ে চুবিয়ে মেরেছিলন, হামানকে মাটিতে পুতে দিয়েছিলেন, সা্দ্দাদকে তার জান্নাতের গেইট থেকে কালারে ধরে খোদার জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছিলেন।

   আগস্ট আল্লাহ তা’আলা সেই কুদরতি লিলাখেলাটাই শুরু করে ছিলেন,ছাত্রজনতা ও আমজনতার ভয়ে নব্য ফেরআউন শেখ হাসিনা  অত্যান্ত লাঞ্ছিত অবস্থায় নিজের পড়নের  কাপড় রেখেই ভাগতে বাধ্য হয়েছিল, পরবর্তীতে মানুষ তার ও তার বাবা জারজ সন্তান শেখ মুজিবের ছবিতে প্রকাশ্যে প্রস্রাব করতে বাধ্য হয়েছে।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ক্বওমী মাদরাসার ছাত্রদের অপরিসীম অবদানের কথা ভুলে গেলে চলবে না, যাত্রাবাড়ি,জামিয়া রাহমানিয়া, ফরিদাবাদ,উম্মুল মু’মিনীন মুঈনুল ইসলাম হাটাজারী মাদরাসার ছাত্ররা শিশা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় বদ্ধমূল ছিল,আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে ঢাকার আকাশ পাতাল প্রকম্পিত করে ছিল,যার হাতে যা ছিল তা নিয়েই রাজ পথে নেমে ছিল,প্রায় ৭২ জন ছাত্র শহীদি পেয়ালা প্রাণ করে ছিল,তারা পূর্ব থেকে রাজ পথে ছিল,এখনোও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশা আল্লাহ ।

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুগন সংবাদ আসছে হযরত ডাই্নি শেখ হাসিনা নাকি আবার দেশে ফিরবে, আমরা বলবো জী আসেন । আমরা আপনার অপেক্ষায় বসে আছি,কারণ  আপনার মামলা সেঞ্চুরি হয়েছে। তাছাড়া আমরা ২০০৯ সালের পীলখানার হত্যা কান্ডের কথা ভুলে যায়নি,

 ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের সেই কালো রাতের কথা স্মৃতিপট থেকে ডিলেট হয়ে যায়নি,সে জামার রক্তের দাগ এখনো মুছে যায়নি, ২০২১ সালের গুজরাটের কসাই নরেন্দ মুদি আগমন বিরুধী আন্দোলনে শহীদ ভাইদের লাশের গন্ধ এখনো নাকের ডগা থেকে দূর হয়ে যায়নি , ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার তাজা রক্ত এখনো শুকে যায়নি, তাদের গোসল বিহীন জানাযা বিহীন গনকবর থেকে পঁচা গন্ধ আসছে, জামাতে ইসলামের নেতাকর্মীদেরকে নির্মম ভাবে ফাসিতে ঝুলানোর সেই করূণ দৃশ্য এখনো হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আলো বাতাসহীন বাকরূদ্ধকর সেই আয়না ঘরের ভয়ংকর  শব্দগুলো বার বার হৃদয়ের দোয়ারে কড়া নাড়ছে .  সুতরাং আপনি আসুন । খেলা হবে,খেলা হবে, আপনি বাবার প্রতিশোধ নিতে মেজর  বজলুল হুদাকে জবাই করে ছিলেন ,বাংলার মুসলমান হাজার  লাশের প্রতিশোধ এতো সহজে নিবেনা, বরং আপনার শরীরের গোশত টুকরা টুকরা করে এক অংশকে লেঞ্জা ছাড়া কুত্তাকে খাওয়াবে, আরেক অংশকে শুকুরকে খাওয়ানো হবে, আরেক অংশকে  চুর,মেন্টাল, সজিব ওয়াজিদ জয়ের জন্য রেখে দেওয়া হবে, যাতে করে শেখের বংশ কিয়ামত পর্যন্ত রাজনীতির নাম মুখে না আনতে পারে। ইনশা আল্লাহ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *