মান্নতের কুরবানীর গোশত মান্নতকারী খেতে পারবে না। মান্নতকারী ধনী হোক বা দরিদ্র। অপর তিন ইমামও (অর্থাৎ ইমাম মালেক রাহ., ইমাম শাফেয়ী রাহ., ইমাম আহমাদ রাহ.) অনুরূপ বলেছেন। ইমাম আহমাদ রাহ. থেকে ভিন্ন একটি মতও রয়েছে। তা হল, মান্নতকারী মান্নতের কুরবানীর গোশত থেকে খেতে পারবে। -আলবিনায়া ১৪/৩৯৩
কিন্তু সম্প্রতি কোনো কোনো মহল থেকে মাযহাবের স্বীকৃত উক্ত মাসআলার বিপরীত একটি বিচ্ছিন্ন বক্তব্য জোরেশোরে প্রচার হতে দেখা যায়। তা হল, কুরবানীর মান্নতের গোশত সাধারণ কুরবানীর মতোই; তা মান্নতকারী খেতে কোনো অসুবিধা নেই। তাঁরা বাদায়েউস সানায়ে-এর একটি বক্তব্যকে দলীল হিসেবে পেশ করে থাকেন। যা মূলত ইমাম কাসানী রাহ.-এর উক্ত বক্তব্যের মাহমিল তথা সঠিক প্রয়োগক্ষেত্র অনুধাবন না করারই অনিবার্য ফল। জানা কথা যে, ‘বাদায়ে’ এ যুগের কোনো কিতাব নয়; বরং তা ষষ্ঠ শতাব্দীর কিতাব। যার পরে সুদীর্ঘ আটটি শতাব্দী গত হয়েছে। উক্ত বক্তব্য পরবর্তী ফকীহগণের সামনেও ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা মান্নতের কুরবানী সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবেই বলে গেছেন, মান্নতকারী মান্নতের কুরবানী থেকে খেতে পারবে না। ফকীহগণের সুবিশাল এ জামাতের সুস্পষ্ট বক্তব্যের বিপরীতে মান্নতের কুরবানীর গোশত খাওয়া বৈধ বলা কতটা সঠিক কাজ তা ঠাণ্ডা মাথায় ভাবা উচিত। বিচ্ছিন্ন এ মতটির কারণে প্রায় প্রতি বছরই কুরবানীর সময় এ নিয়ে সাধারণ অনেকের মাঝে একধরনের বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হয়। দ্বীনী বিষয় নিয়ে এমনটি কিছুতেই কাম্য নয়। বিশেষত যে মাসআলাটি যুগ যুগ থেকেই মীমাংসিত ও স্বীকৃত।